একটি সবুজ দরজা
লেখক: ও হেনরি
সত্যিকারের দুঃসাহসী মানুষ তো খুব বেশি হন না। যে ধরণের মানুষের কথা পুঁথিতে লেখা হয় তারা অধিকাংশই ব্যবসায়ী মানুষ, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হিসেবী। সত্যিকারের দুঃসাহসী মানুষেরা ছুটে বেড়ায় উদ্দেশ্যবিহীন পথে, অজ্ঞাত ভাগ্যের সন্ধানে। তার একটি সুন্দর দৃষ্টান্ত হচ্ছে বাইবেলের “বেহিসেবী ছেলেটি"-- যখন সে যাত্রা করেছিল বাড়ি ফেরার পথে।
রাত দশটার সময় নিউইয়র্কের ব্রডওয়ে দিয়ে হাঁটছিল রুডলফ্ স্টেনার। রুডলফ্ সেই সত্যিকারের দুঃসাহসিক মানুষদের মধ্যে একজন যারা প্রতি সন্ধ্যায় ঘর থেকে বেরিয়ে পড়ে অভাবিত ও উৎকট কিছুর সন্ধানে। পথের ঠিক একটা মোড়ের পরেই কি রহস্য লুকিয়ে আছে সেটাকে জানাই তার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। নিয়তির সন্ধানে পথ চলতে গিয়ে অদ্ভুত সব জায়গায় সে এর আগেও গেছে। এমনকি দু-রাত পুলিশের হাজতেও কাটিয়েছে সে। বহুবার ঠকবাজদের পাল্লায়ও পড়েছে। টাকা পয়সাও খুইয়েছে অনেক। কিন্তু নতুনকে জানার এই আগ্রহে সে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত ঘুরে বেড়ায়। দিনের বেলায় এক পিয়ানোর দোকানে বিক্রেতার চাকরি করা আমাদের দুঃসাহসী যুবকটি বেশ খোশ মেজাজেই ছিল।
হাঁটতে হাঁটতেই সে এক দাঁতের ডাক্তারের দোকানের দিকে তাকাল। উজ্জ্বল বৈদ্যুতিক বাতি জ্বলা দোকানটিতে সামনেই বসানো ছিল একটা শোকেস। শোকেসের মধ্যে দাঁতের কড়মড় আওয়াজ হচ্ছিল। দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল এক বিশালাকায় নিগ্রো, যার কাজ-করা লাল কোট, হলুদ ট্রাউজার ও সামরিক টুপির সাজে আকৃষ্ট হচ্ছিল পথচারীরা। আগ্রহীদের সে একটি করে কার্ড বিলি করছিল। দাঁতের ডাক্তারদের এরকমভাবে কার্ড বিলি করার প্রথা রুডলফ্ বহু দেখেছে। রুডলফ্ অন্যান্য দিনের মতোই ওই নিগ্রোটির পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় এমন কৌশলের সাথে মানুষটি একটা কার্ড তার হাতে গুঁজে দিল যে সে একটু হেসে কার্ডটি হাতে নিল।
আরও কিছুক্ষণ হেঁটে যাওয়ার পরই তার দৃষ্টি কার্ডটার ওপর পড়ল। অন্যমনষ্কভাবে কার্ডটাকে দেখতে গিয়ে সে দেখতে পেল, কার্ডটার একদিক ফাঁকা ও একদিকে লেখা আছে “একটি সবুজ দরজা”। কৌতুহলী হয়ে রুডলফ্ স্টেনার আশেপাশে পড়ে থাকা আরও কয়েকটি কার্ড তুলে দেখল তার কার্ড ছাড়া প্রতিটি কার্ডেই দাঁতের ডাক্তারের বিজ্ঞাপন ছাপা আছে। কোনও দুঃসাহসিক কাজে নামতে রুডলফ্ স্টেনারকে দুবার বলতে হয় না, এবারও তার ব্যতিক্রম হল না। রুডলফ্ স্টেনার হেঁটে ডাক্তারখানার কাছেই আবার ফিরে এল। বিশালাকার আফ্রিকানটি হেসে হেসে কার্ড বিলি করছে, এবারও সে রুডলফ্ কে দেখে তার মাথাটা সম্মানসূচকভাবে হেলালো, কিন্তু কোনও কার্ড তাকে দিল না। কালো মানুষটি প্রতি আধমিনিট অন্তর অন্তর একটা দুর্বোধ্য বাক্য মন্ত্রের মতো আওড়াচ্ছিল ও রুডল্ফের মনে হল হাসা সত্ত্বেও তার চোখ দিয়ে বেরিয়ে আসছে তাচ্ছিল্যভরা শীতল ঠান্ডাদৃষ্টি।
ওর দৃষ্টিটা যেন রুডলফ্ কে হুল ফোটাল। সেই দৃষ্টির মধ্যে সে যেন পড়তে পারল নিজের যোগ্যতা সম্বন্ধে লোকটার মনের একটা নীরব অভিযোগ। কার্ডে লেখা রহস্যময় শব্দের অর্থ যাই হোক কালো মানুষটা তাকেই কার্ড পাওয়ার উপযুক্ত বলে বেছে নিয়েছিল। আর এখন রুডল্ফের মনে হচ্ছে সে যেন বলতে চাইছে এই হেঁয়ালিটা বোঝার কোনও সাধ্যই তার নেই।
কিন্তু রুডলফ্ স্টেনার দুঃসাহসী। সে ভিড় থেকে একপাশে সরে এসে বাড়িটাকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে দেখল। অতিদ্রুত বাড়িটা সম্বন্ধে একটা ধারণা করে নেওয়ার সাথে সাথেই তার মনে হতে লাগল, এই বাড়িটার কোথাও কার্ডের রহস্যটা লুকিয়ে আছে।
বাড়িটা পাঁচতলা উঁচু। নিচে সিঁড়ির কাছে একটা রেস্টুরেন্টও রয়েছে। বন্ধ একতলাটাকে প্রথমেই সন্দেহের বাইরে রাখল সে। দোতলাটা পুরোপুরি দাঁতের ডাক্তারের দখলে। তার ওপরে নানান ভাষার জগাখিচুড়ি বিজ্ঞাপন দেখলেই বোঝা যায় সেখানে ভিড় করে আছে বাজনদার, গণৎকার ও ডাক্তারের দল। আরও উঁচুতে জানালার গোবরাটে রাখা সাদা বোতলগুলোই বলে দিচ্ছে সেগুলি ঘরসংসারের এলাকা।
বাড়িটা দেখা শেষ হলে রুডল্ফ স্টেনার পাথরের উচু সিঁড়িতে দ্রুত পা ফেলে বাড়িতে ঢুকে গেল। কার্পেট ঢাকা সিঁড়ির আরও দুটো ধাপ পেরিয়ে সিঁড়ির মাথায় একটু থামল। হল-ঘরে যাওয়ার পথে দুটো গ্যাসের বাতি টিমটিম করে জ্বলছিল, একটা তার ডানদিকে কিছুটা দূরে, অন্যটা আরও কাছে বাঁদিকে। কাছের আলোটার দিকে তাকিয়ে তার আভায় সে দেখতে পেল একটা সবুজ দরজা। এগোবে কিনা ভাবতে গিয়ে তার চোখে ভেসে উঠল আফ্রিকান লোকটির তাচ্ছিল্যভরা হাসিমুখটা। সিদ্ধান্ত নিয়ে নিল রুডলফ্। সোজা সবুজ দরজাটায় গিয়ে ঘা দিল।
ভিতর থেকে কোনও জবাব আসার আগে রুডলফের মনে সিনেমাস্কোপের মত ভেসে যেতে থাকল পরপর ছবি। ভিতরে তাসারুরা জুয়া কেলতে পারে, ধূর্ত বদমাশেরা সুকৌশলে ফাঁদ ফেলতে পারে, কোনও সাহসিকা সুন্দরীর প্রেমের খেলা চলতে পারে, বিপদ, মৃত্যু, প্রেম, হতাশা, পরিহাস -- ইত্যাদি নিয়ে ভাবতে ভাবতেই, ক্যাঁ.....চ, দরজা খুলে গেল।
দরজাটা ধীরে ধীরে খুলতে রুডলফ্ যেন প্রথমে কিছু দেখতে পাচ্ছিল না। একটা মেয়ে, বিশ বছরেরও কম বয়স হবে, দরজাটা ধরে দাঁড়িয়ে আছে। না, না, দাঁড়িয়ে আছে না, দরজাটার হাতলটায় ভর করে একটু একটু দুলছে। মুখটা সাদা হয়ে গেছে। মেয়েটি সামনের দিকে পড়ে যাবার উপক্রম করতেই রুডলফ্ তাকে দুহাতে ধরে নিয়ে ঘরের ভেতরের একমাত্র বিবর্ণ কোচটায় শুইয়ে দিল। দরজাটা বন্ধ করে দিয়ে সে দ্রুত চোখে একবার গ্যাসবাতির আলোয় ঘরটার চারদিকে চোখ বুলিয়ে নিল। ঘরটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কিন্তু তার সর্বাঙ্গে চরম দারিদ্রের ছাপ স্পষ্ট।
রুডল্ফের মনোযোগ আবার মেয়েটির দিকে পড়ল। কোচে মেয়েটি নিঝুম হয়ে পড়ে আছে, বুঝিবা মূর্চ্ছা গেছে। রুডলফ্ উত্তেজিতভাবে ঘরের মধ্যে একটা পিপে খুঁজল। পিপেতে চেপে ধরে মেয়েটিকে ঘোরালে হয়তো কোনও উপকার....... না না, সে তো জলে ডোবা লোকেদের জন্য। নিজের টুপি দিয়ে মেয়েটিকে হাওয়া করতে গিয়ে টুপিটা মেয়েটার নাকে লাগাতে সে চোখ খুলল। তার দিকে চেয়ে যুবকটি যেন দেখতে পেল সেই মুখখানির ছবি, যাকে সে এতদিন ধরে খুঁজছে। সরল, ধূসর দুটি চোখ, ছোট টিকালো নাক, একঢাল বাদামী চুল-- এতদিনে যুবকটির সব খোঁজার যেন অবসান হল। কিন্তু মুখখানি বড়ই বিবর্ণ, বড়ই শীর্ণ।
শান্ত দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে মেয়েটি হাসল।
দুর্বল গলায় বলল -- আমি মূর্চ্ছা গিয়েছিলাম, না? তাতে আমার কি দোষ বলুন? আপনিও যদি তিনটে দিন না খেয়ে কাটান, তাহলে বুঝতে পারবেন।
-- হিমেল! লাফ দিয়ে উঠে দাঁড়াল রুডলফ্ স্টেনার। -- আমি ফিরে না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা কর।
এক ধাক্কায় দরজাটা খুলে সে সবেগে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামতে থাকল। বিশ মিনিটের মধ্যেই ফিরে এসে সে দরজায় আবার এক ধাক্কা দিল। মেয়েটি উঠে এসে দরজাটা খুলে দিল। দুই হাতে ভরে একরাশ খাবারদাবার নিয়ে যুবকটি ঘরে ঢুকল। টেবিলে খাবারগুলি সাজিয়ে রাখল সে -- রুটি ও মাখন, ঠান্ডা মাংস, কেক, মটরশুঁটি, চাটনি, ঝিনুক, মুরগির রোস্ট, এক বোতল দুধ, আর এক বোতল গরম চা।
গর্জন করে বলল রুডলফ্ স্টেনার, -- না খেয়ে থাকাটা একটা হাস্যকর ব্যাপার। এ অভ্যাস তোমাকে ছাড়তেই হবে। খাবার প্রস্তুত। হাত ধরে মেয়েটিকে টেবিলের পাশে একটা চেয়ারে বসিয়ে দিয়ে বলল, -- চা টা ঢেলে নেওয়ার জন্য একটা কাপ আছে কি?
-- জানলার পাশেই আছে, মেয়েটি জবাবে বলল কাপ নিয়ে ফিরে আসতে আসতে রুডলফ্ দেখল মেয়েটি ততক্ষণে চাটনির মোড়ক খুলে একটা বড়সড় চাটনির টুকরো বের করে ফেলেছে। হেসে সে টুকরোটা তার হাত থেকে নিয়ে এক কাপ দুধ ঢেলে দিয়ে যুবকটি বলল, -- আগে এটা খাও। তারপর তোমাকে দেব চা আর একটা মুরগির ঠ্যাং। তারপর যদি সুস্থ থাক তাহলে চাটনি খেতে পাবে কাল। তবে এই মুহুর্তে যদি আমাকে অতিথি হওয়ার অনুমতি দাও তাহলে আমরা একসঙ্গেই নৈশভোজটা সারতে পারি।
চেয়ারটা এগিয়ে সে বসে পড়ল। পেটে চা পড়ায় মেয়েটির চোখ ইতিমধ্যেই বেশ উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। মুখের রঙও কিছুটা ফিরে এসেছে। একটা ক্ষুধার্ত বন্য জন্তুর মতোই সে খাবার খেতে লাগল। মজার কথা হল, যুবকটির উপস্থিতি ও তার কাছ থেকে পাওয়া সাহায্যটাকে সে সহজভাবেই গ্রহণ করেছে। তা বলে সে যে সাহায্যটাকে কম বলে মনে করছে তা নয়। আসলে যুবকটির আচরণ তাকে ভরসা যোগাচ্ছে। কিছুক্ষণ পরে মেয়েটি তার স্বাভাবিকতা ফিরে পেয়ে রুডলফকে তার জীবনের কাহিনীটা বলতে লাগল।
শহরের আর দশটা কর্মরতা মেয়ের মতোই তার জীবন -- শহরের কোনও এক দোকানের অল্প মাইনের এক মেয়ে কর্মচারীর কথা। মালিকের মুনাফার বহর বড় করার জন্যে “জরিমানা"র কাঁচি চালিয়ে তার মাইনে স্বল্প থেকে স্বল্পতর হয়ে যাওয়া, তার ওপরে চিকিৎসা না হওয়ার কারণে লেগে থাকা অসুখবিসুখ, ফলে চাকরি থেকে ছাঁটাই, আশাভঙ্গের সেই বহুশ্রুত জীবনী। কাহিনীটা শুনে যুবকটির মনে হল সে কাহিনী যেন "ইলিয়াডের মতোই বড়" বা "জুনির প্রেমের পরীক্ষার" মতোই মর্মান্তিক।
-- এত ঝড় ঝাপটা তোমার ওপর দিয়ে গেছে ভাবতেও কষ্ট হয়,রুডলফ্ বলল।
-- বড় ভয়ঙ্কর সে সবদিন, মেয়েটি গম্ভীরভাবে বলল।
-- শহরে তোমার কোনও আত্মীয় বা বন্ধু নেই, যুবকটি জিজ্ঞাসা করল।
-- কেউ নেই।
-- আমিও এ পৃথিবীতে একদম একা, গভীর দীর্ঘশ্বাসের সঙ্গে কথাটা রুডল্ফের বুক থেকে বেরিয়ে এল।
-- শুনে ভাল লাগছে, মেয়েটি বলল। নিজের বঞ্চিত জীবনের কথা শুনে মেয়েটি যে অন্তর থেকে জবাব দিয়েছে তা শুনে যুবকটিরও ভাল লাগল। হঠাৎই মেয়েটির চোখের পাতা নেমে এল। --আমার ঘুম পাচ্ছে; আর কি যে ভাল লাগছে, মেয়েটি ছোট্ট হাই তুলে বলল।
রুডলফ্ উঠে দাঁড়িয়ে টুপিটা হাতে নিয়ে বলল, -- তাহলে আমি আসি। তুমিও ঘুমোও। আরাম পাবে।
রুডল্ফের বাড়ানো হাত ধরে মেয়েটি বলল, -- শুভরাত্রি। কিন্তু তার দুচোখে একটা প্রশ্ন এত করুণভাবে, এত সরবে ফুটে উঠল যে যুবকটি সে কথার জবাব না দিয়ে পারল না।
-- আরে, তুমি কেমন আছ তা দেখতে তো আমি কালই আসছি। এত সহজে তুমি আমার হাত থেকে নিস্তার পাবে না।
দরজার কাছে এসে মেয়েটি বলল, -- এত দরজা থাকতে তুমি আমার দরজায় কিভাবে ধাক্কা মারলে?
রুডলফ্ তার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইল। কার্ডের কথাটা তার মনে পড়ে গেল, আর হঠাৎই তার মনে একটা ঈর্ষাকাতর যন্ত্রণা ফিরে এল। কার্ডটা যদি তার হাতে না এসে কোনও দুঃসাহসিক অন্য কারও হাতে পড়ত তা হলে কি হত? সঙ্গে সঙ্গে সে স্থির করে ফেলল যে আসল সত্যটা মেয়েটিকে কোনওদিনই জানানো হবে না।
মুখে সে বলল -- আমাদের পিয়ানোর এক সুরকার এই বাড়িটাতেই থাকে। আমি ভুল করে তোমার দরজাটায় ঘা দিয়েছিলাম।
মেয়েটি হাসল। সবুজ দরজাটা বন্ধ হওয়ার আগে এই দৃশ্যটাই রুডলফ্ স্টেনার দেখেছিল। সিঁড়ির মাথায় সে একবার থামল। কৌতুহলী দৃষ্টিতে সে চারদিকে তাকাল। সে অবাক হয়ে গেল। তারপর সমস্ত তলাটা সে চক্কর কেটে ঘুরে এল। ফিরে এসে একবার ওপর তলায় গেল, তারপর সিঁড়ি দিয়ে প্রত্যেক তলায় নেমে চারদিক দেখতে লাগল।
বাড়িটার প্রত্যেক তলার প্রতিটি দরজার রঙ সবুজ।
অবাক হয়ে ভাবতে ভাবতে সে রাস্তায় নেমে এল। অদ্ভুত পোশাক পরা নিগ্রোটা তখনও সেখানে দাঁড়িয়েছিল। নিজের কার্ডটা বাড়িয়ে সে তাকে জিজ্ঞেস করল, -- তুমি এই কার্ডটা আমাকে দিয়েছিলে কেন? এর মানেই বা কি?
নিগ্রো মানুষটা দাঁত বের করে হাসতে হাসতে বলল, ওই যে ওখানে দেখুন মশাই। কিন্তু আপনি তো একটু দেরি করে ফেলেছেন। প্রথম অংশটা তো এই শেষ হয়ে গেল।
তার আঙুল বরাবর লক্ষ্য করে যুবকটি দেখল, রাস্তার উল্টোদিকে একটা থিয়েটারের ফটকের মাথায় বিদ্যুতের উজ্জ্বল আলোয় দেখা যাচ্ছে একটা সাইনবোর্ড, “একটি সবুজ দরজা"।
নিগ্রোটি বলে চলছিল, -- সকলেই বলছে নাটকটা খুব ভাল হয়েছে। ওদের এজেন্ট আমাকে একটা ডলার দিয়ে বলল, আমি যেন ডাক্তারের সঙ্গে এই কার্ডটাও বিলি করি। ডাক্তারের একটা কার্ড কি আপনাকে দেব মশাই?
বাড়ির পথে চলতে চলতে রুডলফ্ একটা বিয়ার আর চুরুটের জন্য থামল। চুরুটটা ধরিয়ে কোটের বোতামটা এঁটে নিল, টুপিটাকে পিছনে ঠেলে দিল, তারপর মোড়ের ল্যাম্পপোস্টটাকেই যেন লক্ষ্য করে বলল, -- আর যাই হোক, ভাগ্যই আমাকে হাত ধরে ওর কাছে নিয়ে গিয়েছিল।
অনুবাদ: শুভব্রত ভট্টাচার্য
শেষ
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment